বঙ্গবন্ধুর বাজেয়াপ্ত চিঠিপত্র সূত্রে জানা যায়, জেলখানায় বসেও তিনি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কারাগারের বাইরে মুক্ত থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক নেতা ও সহকর্মীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময়ের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ১৯৫২ সালের ২৩ আগস্ট ঢাকার নবাবপুরের আওয়ামী মুসলিম লীগের দফতর থেকে করাচির কূটচেরি রোডে সোহরাওয়ার্দীর ঠিকানায় বঙ্গবন্ধু ইংরেজিতে লেখা এক চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, তার ও আতাউর রহমান খানের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে সফর বিপুল সাড়া জাগালেও সংগঠনের জন্য অর্থের প্রয়োজন। পাটের মূল্য কম থাকায় সাধারণ মানুষ অভাব-অনটনে আছে। তাদের কাছে তহবিলের জন্য আবেদন করা যাবে না। একইভাবে ইত্তেফাক-এর প্রকাশনা অব্যাহত রাখার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং অভিভাবকতুল্য সহকর্মী তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকেই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক সহকর্মী- এমন কী মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও চিঠি লিখে তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। কারাগারের ভেতর এবং বাইরে থেকে লেখা এ ধরনের চিঠিও তখনকার পাকিস্তান সরকারের গোয়েন্দারা জব্দ করতেও দ্বিধা করেনি। পাকিস্তান সরকারের বাজেয়াপ্ত করা চিঠিপত্র থেকে একটি জিনিস স্পষ্টই বোঝা যায় যে রাজনৈতিক সহকর্মী বা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অপরিসীম দরদ। অনেক সময় তিনি তাদের পরিবার-পরিজনকে চিঠি লিখে সান্ত্বনা বা সহমর্মিতা জানিয়েছেন।মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ
মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ
মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ
মহোদয়,
যথাযোগ্য মর্যাদা ও সন্মান পুরঃসর বিনীত নিবেদন এই যে, আমি জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নূর আলীর ব্যক্তিগত সচিব থাকাকালীণ ২০০২ সালে জামাত বি এন পি জোট সরকারের অবৈধ আস্তানা "হাওয়া ভবনের" ভূয়া মামলা ও নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হই এবং মালদ্বীপে এসে একটি স্কুলে শিক্ষকতা শূরু করি।
আমার চির স্বভাবজনিত দুর্বিনীত প্রতিবাদী মানসিকতার কথা স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারের বহু নেতা/মন্ত্রীগণ অবহিত রয়েছেন। আওয়ামী লীগ অফিসে বঙ্গবন্ধুর গানের মুক্তি নামেই সর্বজনবিদিত।
আওয়ামী রক্ত তাই প্রবাসে এসেও নীরব থাকতে পারিনি; যে দেশে প্রবাসীদের রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ সে দেশে আমি মুক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ।
মালদ্বীপস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ( সাবেক হাই কমিশন) এর সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী হিসেবে বহু লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের অনেক অনুষ্ঠানেই বহু মন্ত্রী ও মান্যবর সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল সাহেবও যোগদান করেছিলেন । ভিডিও ও ছবি প্রমানবহন করে (ছবি সংযুক্ত )
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০১৪ সালে ইস্কান্দার স্কুলে জাতীয় শোক দিবস পালনের আয়োজন করেছিলাম । সে অনুষ্ঠান করতে দেয়নি হেড অফ দি চ্যাঞ্চেরী হারুন অর রশিদ।
আমি মালদ্বীপের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ডঃ ইয়ামীন মাওমুনের একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সামনেই ছিলাম।
হঠাত একটি ফোন এলোঃ
*******************
ঃহ্যালো আমি হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী হারুন অর রশিদ বলছি;
ঃকে মুক্তি সাহেব বলছেন?
ঃজ্বি
ঃশুনেছি আপনি ১৫ই আগষ্ট পালন করছেন আপনার ইস্কান্দার স্কুলে?
ঃজ্বি আমার সব অনুষ্ঠান তো ইস্কান্দার স্কুলেই হয়ে থাকে।
ঃআপনি এ অনুষ্ঠান করতে পারবেন না; ঐ দিন হাই কমিশন থেকে অনুষ্ঠান করা হবে সূতরাং আপনার অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে;
ঃআমি এ মুহূর্তে কথা বলতে পারছি না; আমি প্রেসিডেন্টের সামনে কাজেই পড়ে কথা বলছি;
ঃআপনি বুঝতে পারছেন তো যে হাই কমিশন আপনাকে কল করেছে?
******************
মালদ্বীপের রাজধানী মালে ইস্কান্দার স্কুলে আমি মুক্তি যে হলটিতে পররাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রবাসী কল্যান ও জনশক্তিমন্ত্রী ইঞ্জিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দেরকে সংবর্ধনা দিয়েছি, সে হলেই আয়োজন করেছিলাম জাতীয় শোক দিবস ২০১৪।
সে অনুষ্ঠানের অপরাধেই আমার মালদ্বীপের সোনালী দিনগুলো ১৫ই আগস্টের চেয়েও ভয়াবহ করে তুলেছিল এই হারুন অর রশিদ, হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী এবং সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল।
********
মালদ্বীপে আমার হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ছেলেদের ভয় ভীতি দেখিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে আমাকে পঙ্গু করে দেয়া হল। তারপরেও হারুন অর রশিদ সাহেবের খায়েশ মিটেনি। সে মালে অবস্থানরত তার পোষা দালাল আদম ব্যবসায়ী, গাঞ্জা ব্যবসায়ী, ডলার ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ নিয়ে চলে এবং সীমাহীন দুর্নীতি লুটপাট করে বেড়ায়। এখানে অতিরঞ্জিত কিছুই লিখছি না। প্রমান সহই দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণ করেছি আমি তদন্ত চাই। অতি সম্প্রতি সে ঐ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। আমাকে টেলিফোনে মারধর করার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
মালদ্বীপ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হয়ে গেল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং স্বাধীনতা দিবসে একজন ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মালদ্বীপ সরকারের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিক্ষক (আমি নিজে ), একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মালদ্বীপে কর্মরত ৩৩ বছরের সিনিয়র ফিজিক্সের শিক্ষক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মীর সাইফুল ইসলাম এবং আর একজন ২৫ বছর যাবত মালদ্বীপে শিক্ষকতায়রত গজল সঙ্গীত শিল্পী মালদ্বীপের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সর্বজনবিদিত শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম।
এই তিন জন শিক্ষকের কাউকেই মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মালদ্বীপস্থ দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেন নি। বিষয়টি মালদ্বীপের মন্ত্রণালয় ও প্রেসিডেন্ট হাউসের কর্মকর্তাদেরও নজরে এসেছে। এ দেশে বাংলাদেশী এই তিনজন শিক্ষকই অত্যন্ত দক্ষতার কারনে এবং বিশেষ করে শফিক ও আমি গানের কারনে প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে কোন মন্ত্রী, ধনিক ব্যবসায়ী, বর্ণাঢ্য বণিক শিল্পী ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কেউ নেই যে আমাদের এই তিনজনকে না চিনেন বা না জানেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে স্বাধীনতা দিবসে আমন্ত্রণ না করার হেতু একটাই হতে পারে যে দেশ আজো স্বাধীন হয়নি অথবা এই দূতাবাস পাকিস্তানের অথবা এই দূতাবাসে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী নেই।
মহান স্বাধীনতা দিবসে কেন আমাদের দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেনি? আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভাগীয় মাননীয় মন্ত্রী হিসেবে আপনাকে অবহিত করলাম।
আমরা জাতীয় সম্পদ। আমাদেরকে জাতীয়ভাবেই অপমান করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। কারন জানতে চাই।
মহানুভব, পররাষ্ট্রনীতি ও কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত আপনার সমগ্র জীবনের লব্ধ অভিজ্ঞতা আজ পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রশাসনিক জটিলতা সমস্যাদি সমাধান ও বিদেশের সাথে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপনে আপনার সততা শ্রম ও সফলতার সূত্র ধরেই আজ সুবিচারের প্রত্যাশায় আপনাকে অবহিত করলাম। যদি বাংলাদেশ সরকার মনে করে আমি বাঙ্গালী নই, বাংলাদেশী নই-আমার পাসপোর্ট বাংলাদেশ সরকার জব্ধ করতে পারে, আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্ত এ অপমানের বোঝা নিয়ে বাঙ্গালী হিসেবে আর মালদ্বীপে পরিচয় দিতে চাইনা। প্রয়োজনে পাসপোর্ট পুড়িয়ে শরণার্থী হয়ে যাবো যেমনটি হয়েছিলাম ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নিয়ে।
ভালো থাকুক দেশের মানুষ ভালো থাকুক শেখ মুজিবের নিরস্পেষিত নির্যাতিত লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত চির দুখি চির সংগ্রামী বাঙ্গালী জাতি।
আল্লাহ আপনার ভালো করুন;
দেশ আরো এগিয়ে যাক, আরো উন্নয়ন ঘটূক, উত্তরোত্তর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ খ্যাত স্বীকৃতিকে ডিঙ্গিয়ে উন্নত দেশের তালিকায় লিপিবদ্ধ হোক;
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
আপনার একান্ত ভক্ত অনুরাগী
মোকতেল হোসেন মুক্তি
বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কন্ঠশিল্পী
সিনিয়র সঙ্গীত শিক্ষক
ইস্কান্দার স্কুল মালে, মালদ্বীপ
Friday, May 20, 2011
পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর কিংবা তাকে লেখা বিভিন্ন জনের বাজেয়াপ্ত করা চিঠিপত্র
বঙ্গবন্ধুর বাজেয়াপ্ত চিঠিপত্র সূত্রে জানা যায়, জেলখানায় বসেও তিনি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কারাগারের বাইরে মুক্ত থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক নেতা ও সহকর্মীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময়ের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ১৯৫২ সালের ২৩ আগস্ট ঢাকার নবাবপুরের আওয়ামী মুসলিম লীগের দফতর থেকে করাচির কূটচেরি রোডে সোহরাওয়ার্দীর ঠিকানায় বঙ্গবন্ধু ইংরেজিতে লেখা এক চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, তার ও আতাউর রহমান খানের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে সফর বিপুল সাড়া জাগালেও সংগঠনের জন্য অর্থের প্রয়োজন। পাটের মূল্য কম থাকায় সাধারণ মানুষ অভাব-অনটনে আছে। তাদের কাছে তহবিলের জন্য আবেদন করা যাবে না। একইভাবে ইত্তেফাক-এর প্রকাশনা অব্যাহত রাখার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং অভিভাবকতুল্য সহকর্মী তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকেই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক সহকর্মী- এমন কী মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও চিঠি লিখে তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। কারাগারের ভেতর এবং বাইরে থেকে লেখা এ ধরনের চিঠিও তখনকার পাকিস্তান সরকারের গোয়েন্দারা জব্দ করতেও দ্বিধা করেনি। পাকিস্তান সরকারের বাজেয়াপ্ত করা চিঠিপত্র থেকে একটি জিনিস স্পষ্টই বোঝা যায় যে রাজনৈতিক সহকর্মী বা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অপরিসীম দরদ। অনেক সময় তিনি তাদের পরিবার-পরিজনকে চিঠি লিখে সান্ত্বনা বা সহমর্মিতা জানিয়েছেন।










No comments:
Post a Comment