মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ

মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ

মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ

মহোদয়,

যথাযোগ্য মর্যাদা ও সন্মান পুরঃসর বিনীত নিবেদন এই যে, আমি জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নূর আলীর ব্যক্তিগত সচিব থাকাকালীণ ২০০২ সালে জামাত বি এন পি জোট সরকারের অবৈধ আস্তানা "হাওয়া ভবনের" ভূয়া মামলা ও নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হই এবং মালদ্বীপে এসে একটি স্কুলে শিক্ষকতা শূরু করি।

আমার চির স্বভাবজনিত দুর্বিনীত প্রতিবাদী মানসিকতার কথা স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারের বহু নেতা/মন্ত্রীগণ অবহিত রয়েছেন। আওয়ামী লীগ অফিসে বঙ্গবন্ধুর গানের মুক্তি নামেই সর্বজনবিদিত।

আওয়ামী রক্ত তাই প্রবাসে এসেও নীরব থাকতে পারিনি; যে দেশে প্রবাসীদের রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ সে দেশে আমি মুক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ।

মালদ্বীপস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ( সাবেক হাই কমিশন) এর সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী হিসেবে বহু লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।

Image may contain: 1 personএমন কি এতদবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেনারেল আবেদীন, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল ফারুক, আব্দুস সোবহান গোলাপ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমান, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও ডঃ দীপুমনিও অবহিত আছেন।

মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের অনেক অনুষ্ঠানেই বহু মন্ত্রী ও মান্যবর সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল সাহেবও যোগদান করেছিলেন । ভিডিও ও ছবি প্রমানবহন করে (ছবি সংযুক্ত )


মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০১৪ সালে ইস্কান্দার স্কুলে জাতীয় শোক দিবস পালনের আয়োজন করেছিলাম । সে অনুষ্ঠান করতে দেয়নি হেড অফ দি চ্যাঞ্চেরী হারুন অর রশিদ।


আমি মালদ্বীপের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ডঃ ইয়ামীন মাওমুনের একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সামনেই ছিলাম।


হঠাত একটি ফোন এলোঃ

*******************

ঃহ্যালো আমি হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী হারুন অর রশিদ বলছি;

ঃকে মুক্তি সাহেব বলছেন?

ঃজ্বি

ঃশুনেছি আপনি ১৫ই আগষ্ট পালন করছেন আপনার ইস্কান্দার স্কুলে?

ঃজ্বি আমার সব অনুষ্ঠান তো ইস্কান্দার স্কুলেই হয়ে থাকে।

ঃআপনি এ অনুষ্ঠান করতে পারবেন না; ঐ দিন হাই কমিশন থেকে অনুষ্ঠান করা হবে সূতরাং আপনার অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে;

ঃআমি এ মুহূর্তে কথা বলতে পারছি না; আমি প্রেসিডেন্টের সামনে কাজেই পড়ে কথা বলছি;

ঃআপনি বুঝতে পারছেন তো যে হাই কমিশন আপনাকে কল করেছে?

******************

মালদ্বীপের রাজধানী মালে ইস্কান্দার স্কুলে আমি মুক্তি যে হলটিতে পররাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রবাসী কল্যান ও জনশক্তিমন্ত্রী ইঞ্জিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দেরকে সংবর্ধনা দিয়েছি, সে হলেই আয়োজন করেছিলাম জাতীয় শোক দিবস ২০১৪।


সে অনুষ্ঠানের অপরাধেই আমার মালদ্বীপের সোনালী দিনগুলো ১৫ই আগস্টের চেয়েও ভয়াবহ করে তুলেছিল এই হারুন অর রশিদ, হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী এবং সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল।

********

মালদ্বীপে আমার হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ছেলেদের ভয় ভীতি দেখিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে আমাকে পঙ্গু করে দেয়া হল। তারপরেও হারুন অর রশিদ সাহেবের খায়েশ মিটেনি। সে মালে অবস্থানরত তার পোষা দালাল আদম ব্যবসায়ী, গাঞ্জা ব্যবসায়ী, ডলার ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ নিয়ে চলে এবং সীমাহীন দুর্নীতি লুটপাট করে বেড়ায়। এখানে অতিরঞ্জিত কিছুই লিখছি না। প্রমান সহই দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণ করেছি আমি তদন্ত চাই। অতি সম্প্রতি সে ঐ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। আমাকে টেলিফোনে মারধর করার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।


মালদ্বীপ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হয়ে গেল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং স্বাধীনতা দিবসে একজন ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মালদ্বীপ সরকারের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিক্ষক (আমি নিজে ), একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মালদ্বীপে কর্মরত ৩৩ বছরের সিনিয়র ফিজিক্সের শিক্ষক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মীর সাইফুল ইসলাম এবং আর একজন ২৫ বছর যাবত মালদ্বীপে শিক্ষকতায়রত গজল সঙ্গীত শিল্পী মালদ্বীপের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সর্বজনবিদিত শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম।


এই তিন জন শিক্ষকের কাউকেই মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মালদ্বীপস্থ দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেন নি। বিষয়টি মালদ্বীপের মন্ত্রণালয় ও প্রেসিডেন্ট হাউসের কর্মকর্তাদেরও নজরে এসেছে। এ দেশে বাংলাদেশী এই তিনজন শিক্ষকই অত্যন্ত দক্ষতার কারনে এবং বিশেষ করে শফিক ও আমি গানের কারনে প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে কোন মন্ত্রী, ধনিক ব্যবসায়ী, বর্ণাঢ্য বণিক শিল্পী ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কেউ নেই যে আমাদের এই তিনজনকে না চিনেন বা না জানেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে স্বাধীনতা দিবসে আমন্ত্রণ না করার হেতু একটাই হতে পারে যে দেশ আজো স্বাধীন হয়নি অথবা এই দূতাবাস পাকিস্তানের অথবা এই দূতাবাসে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী নেই।


মহান স্বাধীনতা দিবসে কেন আমাদের দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেনি? আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভাগীয় মাননীয় মন্ত্রী হিসেবে আপনাকে অবহিত করলাম।

আমরা জাতীয় সম্পদ। আমাদেরকে জাতীয়ভাবেই অপমান করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। কারন জানতে চাই।


মহানুভব, পররাষ্ট্রনীতি ও কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত আপনার সমগ্র জীবনের লব্ধ অভিজ্ঞতা আজ পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রশাসনিক জটিলতা সমস্যাদি সমাধান ও বিদেশের সাথে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপনে আপনার সততা শ্রম ও সফলতার সূত্র ধরেই আজ সুবিচারের প্রত্যাশায় আপনাকে অবহিত করলাম। যদি বাংলাদেশ সরকার মনে করে আমি বাঙ্গালী নই, বাংলাদেশী নই-আমার পাসপোর্ট বাংলাদেশ সরকার জব্ধ করতে পারে, আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্ত এ অপমানের বোঝা নিয়ে বাঙ্গালী হিসেবে আর মালদ্বীপে পরিচয় দিতে চাইনা। প্রয়োজনে পাসপোর্ট পুড়িয়ে শরণার্থী হয়ে যাবো যেমনটি হয়েছিলাম ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নিয়ে।

ভালো থাকুক দেশের মানুষ ভালো থাকুক শেখ মুজিবের নিরস্পেষিত নির্যাতিত লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত চির দুখি চির সংগ্রামী বাঙ্গালী জাতি।

আল্লাহ আপনার ভালো করুন;

দেশ আরো এগিয়ে যাক, আরো উন্নয়ন ঘটূক, উত্তরোত্তর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ খ্যাত স্বীকৃতিকে ডিঙ্গিয়ে উন্নত দেশের তালিকায় লিপিবদ্ধ হোক;


জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু

আপনার একান্ত ভক্ত অনুরাগী

মোকতেল হোসেন মুক্তি

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কন্ঠশিল্পী

সিনিয়র সঙ্গীত শিক্ষক

ইস্কান্দার স্কুল মালে, মালদ্বীপ

Saturday, June 18, 2016

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান রণেশ মৈত্র

come to mukthi and learn the truth
যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান
রণেশ মৈত্র
যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, তাদের কার্যক্রম ক্রমশই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই বহুলাংশে তাদের বিস্তার ঘটাতে পেরেছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী তা নিরন্তর অস্বীকার করে এগুলো ‘কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়’ বা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জঙ্গি উত্থান এক মারাত্নক উদ্বেগের সঞ্চার করেছে এবং তার বহি:প্রকাশ ঘটেছে গত ৯ জুনে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনটিতে প্রধানত: বাংলাদেশের সরকারি মহলের কর্মকর্তাদেরই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ইসলামী লেবাস পরিহিত যে তরুণটি ঢাকার একটি জনাকীর্ণ চেকপোষ্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সে অধুনা তৎপর পুলিশের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। তরুণটিকে গ্রেফতার করা হয়। অত:পর দেখা যায়, যে একটি চাপাতি এবং লাইসেন্সবিহীন পিস্তল ও ছয়টি বুলেট নিয়ে যাচ্ছিল। তরুণটির কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় একটি আতঙ্কের কারণ বিগত তিনটি বছর ধরে বাংলাদেশে ‘নাস্তিক’ অভিধায় অভিহিত করে স্বাধীনচেতা লেখক, মুক্তমনা ব্লগার, মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, বিদেশী নাগরিক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অপরাপর নানাবিধ পেশায় নিয়োজিত সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে চলেছে।
এই হত্যাকারী আসলে কারা সে সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে। তবে এইটুকু শুধু জানা যায় যে তারা ইসলামের নামে ‘জিহাদের কর্মী এবং ক্রমশই তাদের জিহাদ নামক হত্যালীলা অধিকতর সংখ্যায় সংঘটিত হচ্ছে। আটককৃত ঐ তরুণটি পুলিশের নানা প্রশ্নের জবাবে বেশী কিছু বলতে রাজী হয়নি। শুধুমাত্র বলেছে যে তার নাম সাইফুল ইসলাম, বয়স ২৩ বছর এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে চিত্রটি পাল্টে গেল যখন ১৯ বছর বয়সী অপর দু’জন একটি সফল হত্যালীলা পরিচালনা করে ছুটে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করে দেয় যে ২৩ বছর বয়স্ক সাইফুল ইসলাম তাদেরই সহকর্মী, কোনো মাদ্রাসা শিক্ষক নয়।
ছোট্ট এই ঘটনাটি বাংলাদেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অধিকতর সতর্ক এবং সক্রিয় হতে বাধ্য করেছে। এখন তারা অনেক গভীরে ঢুকে নানা অজানা তথ্য উদঘাটনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। জঙ্গিদের পরিকল্পনা তার বাস্তবায়ন এবং হত্যার উদ্দেশ্য জেনে বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই বাস্তবিক পক্ষেই সমগ্র বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজগুলির বিবরণ জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এই দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৯ জনকে এই জঙ্গিরা বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে এবং এতে ব্যবহৃত অস্ত্র হলো চাপাতি, বন্দুক বা পিস্তল ও বোমা। এই হত্যাকাণ্ডগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাপাতি ব্যবহৃত হয় এবং তাই দিয়ে ভিকটিমের পিঠে আঘাত করে গলা কেটে ফেলতে দেখা যায়। এরকম হত্যা ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এপ্রিলে এভাবে পাঁচজনকে এবং মে মাসে চারজনকে হত্যা করা হয় এবং কমপক্ষে আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে জুনের প্রথমার্ধেই।
গত ৫ জুন একই দিনে উত্তরাঞ্চলের নাটোরের একজন খ্রিষ্টান মুদির দোকানি ও চট্টগ্রামে তথাকার পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। অত:পর দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে একজন হিন্দু পুরোহিতকে বিশাল মাঠের মধ্যে খুন করা হলো। দীর্ঘ ইন্টারভিউতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজের ফলাফল খুঁটিনাটি তুলে ধরে বলেন, দুইটি জঙ্গি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডগুলি চালিয়ে থাকে। তারা হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক রিক্রুট করেছে, অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং অত:পর এক একজন কমান্ডারের নেতৃত্বে তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে এই হত্যালীলা পরিচালনা করছে। তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে তাদের লক্ষ্য (টার্গেট) নির্দিষ্ট করে যাতে জনমত তাদের পক্ষে থাকে এবং এভাবেই খুনীদের প্রশিক্ষিত টিম গড়ে তোলে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের মিশ্রিত ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলামী সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে নিখাদ ইসলাম ধর্মীয় রাষ্ট্রে বাংলাদেশকে পরিণত করা।
বাংলাদেশ সরকার এখানে স্বীকার করেন যে ঐ দুটি জঙ্গি গ্রুপই এগুলি পরিচালনা করছে এবং তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে। জঙ্গিদের নেতারা যখন ধরা পড়বেন, তাদের মতে, এই হত্যালীলা ও আক্রমণ বন্ধ হবে। তবে ইসলামী মৌলবাদ যে ইসলামসম্মত নয় তা জনগণকে বুঝিয়ে আনতে হবে।
সরকার এখন বলেছে, উভয় জঙ্গি গ্রুপের মূল নেতাদেরকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন- ঐ নেতারাই এই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী। পূর্ব ভারতের সংলগ্ন মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ১৯৭১ সালে এবং তখন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার একতা গড়ে প্রায় তিন দশক শাসন কাজ পরিচালনা করে। ঐ সময়েই ইসলামী মৌলবাদের প্রসার ঘটতে শুরু করে। ২০০৯ সালে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় পুনরায় অধিষ্ঠিত হন বিপুল সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়ে শাসন ক্ষমতায় বসেন। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠির কাছে আজও গ্রহণযোগ্য হয় নি-তাই গোঁড়া ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তিত হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদকে সমাজে বহুলাংশে হেয় ও অগ্রহণযোগ্য করে তুলতে সক্ষম হয়েছে। তারা ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্বাসী সরকারটিকে আত্নরক্ষামূলক অবস্থানে ফেলতেও সক্ষম হয়েছে। ফলে, একদিকে সরকার হত্যাকাণ্ডগুলির প্রতিবাদ জানাচ্ছে, অপরদিকে লেখকদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে বা তার সমালোচনা করে না লেখার আহবান জানিয়েছে-আহবান জানিয়েছে ‘অস্বাভাবিক মৌনতা’র সমর্থনে কোনো কিছু না বলতে।
এ বিষয়ে ইনষ্টিটিউট অব ল এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর পরিচালক অবসর প্রাপ্ত মেজর আব্দুর রশীদ বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালালে হত্যালীলা বন্ধ হবে কিন্তু সরকার ততটা এগুতে রাজী না; এই ভেবে যে তার প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দেশের রাজনীতি এখন দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অপরটি ইসলামভিত্তিক। এ কারণেই সরকার অত্যন্ত সতর্ক।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, যখন মৌলবাদীদের ব্যাপক ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে ‘শাহবাগ আন্দোলন’ নামে পরিচিত শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়, জঙ্গিরা তখন ইচ্ছাকৃতভাবেই লোকজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাভিযান শুরু করে। শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবসানের দাবীতে এবং ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবীতে। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে যখন বেশ কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হলো তখন ইসলামী জঙ্গিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, শাহবাগ আন্দোলনটি ২০১৩ সালে গড়ে ওঠে ব্লগারদের নেতৃত্বে।
মনিরুল ইসলাম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, এই হত্যালীলা চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে দুটি জঙ্গি গ্রুপ। এক, আনসার আল ইসলাম- যারা অত্যন্ত ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুর্ধর্ষ খুনি গড়ে তুলেছে তাদের অপারেশন কমান্ডারদের দ্বারা। এসব কমান্ডারদের নাম প্রকাশে তিনি অবশ্য অস্বীকৃতি জানান; কারণ তাদেরকে কঠিন নজরে রাখা হয়েছে। তবে এদের নেতা বা কমান্ডাররা ২৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত খুনি তৈরি করেছে-যাদের কেউ কেউ সাম্প্রতিক ৩/৪টি আক্রমণ পরিচালনা করেছে। দ্বিতীয়ত: জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। এদেরকে চিহ্নিত করা হয় ২০০৫ সালে সারা দেশে একই সাথে প্রায় ৫০০ বোমা ফাটিয়ে ছিল সাফল্যের সাথে। এদেরই একটি অংশ এখন অধিকতর সক্রিয়।
সাক্ষাতকারে মনিরুল ইসলাম অবশ্য আরও বলেন যে এই দুটি গ্রুপই দুর্ধর্ষ ইসলামী জঙ্গিগ্রুপ হলেও এরা কেউই আল কায়েদা বা আইএস জাতীয় আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গি সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এই গ্রুপ দুটি শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ত্বরিত সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একজন ব্লগারকে হত্য করে এই অভিযোগ এনে যে তিনি সরাসরি ইসলামে বিরুদ্ধে লিখে থাকেন। তিনি লিখতেন ‘থাবা বাব’ এই ছদ্মনামে। ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কতিপয় মেধাবী ছাত্র এই নামে লিখতেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় জসীম উদ্দিন রাহমানি নামক ৪৫ বছর বয়স্ক একজন ইসলামী খাদেম ঐ ব্লগারদের হত্যা করার নির্দেশ দেন। অবশ্য জসীম উদ্দিন রাহমানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অার ৩২ বছর বয়স্ক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ, আনসার আল ইসলামের অপর একজন নেতা জুনিয়র ছাত্রদেরকে জসীম উদ্দিন রাহমানির উদ্দীপক বক্তব্য দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে থাবা বাবা নামের লেখকদেরকে হত্যা করতে উত্তেজিত করে তুলতে থাকে।
ঐ রেদোয়ানুল ইসলামের বক্তব্য ছিল, ‘একজন আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী হিসেবে তাদেরকে হত্যা করাটা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’ আটক হওয়া একজন আদালতে এমন বক্তৃতার কথা স্বীকারও করেছে। সে আদালতে বলেছে, ঐ বক্তব্যে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা থাবা বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে- কারণ থাবা বাবা আল্লাহকে অপমানিত করেছে। আটক ওই জঙ্গির নাম ফয়সাল বিন নঈম (২৪)। সে বলেছে, থাবা বাবার ছবি ফেসবুকে দেখে এবং তখন থেকে তাকে খুঁজতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অনুরূপ চেহারার একজননের সন্ধান পায় শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মধ্যে। অবশেষে একজন ৩২ বছর বয়স্ক আর্কিটেক্ট-যার নাম আহমেদ রাজীব হায়দার তাকেই থাবা বাবা হিসেবে চিহ্নিত করে। অত:পর রাজীবের দৈনন্দিন কাজের রুটিন অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত একদিন তারা তিনজন মিলে রাজীবের বাড়ীর সামনে রাত্রি প্রায় ৯টার দিকে পেয়ে যায়। নঈম তখন চাপাতি দিয়ে তার মাথার পেছনে, গলায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঐ আকষ্মিক আঘাতের ফলে।
এরপর প্রধান ইসলামী জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে আনসার আল ইসলাম প্রচার করতে শুরু করলো যে নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারীরাই হলো প্রকৃত ইসলাম সেবক। অন্তত: দুটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত কয়েকটি লেখা তাদেরকে আরও বেশী করে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং পাঠকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও এতে ক্ষুব্ধ হন বলে অভিযোগ। এরা শুরুতে শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকও ছিলেন। পরবর্তী দুই মাসে আরও দুইজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়। পুলিশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব ছাত্রকে জঙ্গি হিসেবে সক্রিয় ছিল তাদেরকে গ্রেফতার করতে শুরু করে। বিশেষ করে যারা হায়দার হত্যায় জড়িত ছিল। পুলিশ পুনরায় রাহমানিকেও গ্রেফতার করে। এরফলে আনসার আল ইসলাম আরও বেশী হত্যাকাণ্ড পরিচালনা থেকে বিরত হয় এবং এরাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বলেও পরিচিত। কিন্তু তারা পুনরায় পুনর্গঠিত হয় সন্ত্রাসী সেল এ যার সংখ্যা জানা যায়নি।
মনিরুল ইসমাল বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আনসার আল ইসলাম অভিজিত রায় নামক আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্লগারকে ঢাকায় হত্যা করে। অভিজিত রায় আমেরিকাতে একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মে দিনে কাজ করতেন এবং রাত্রিতে নানা বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি করতেন যার মধ্যে ধর্ম, বিজ্ঞান, সমকামিতা প্রভৃতি ছিল। বিপুল সংখ্যক আনসার আল ইসলাম জঙ্গিকে কারারুদ্ধ করার পর জেলের ভেতর থেকে পুলিশ এক গোপন তথ্যে জানতে পারে যে পুনর্গঠিত আনসার আল ইসলাম তাদের কর্ম কৌশল পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং তারা মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বিপ্লবী করতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে রিক্রুট করতে শুরু করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও বাদ যাচ্ছেন না। ২০১৩ সালে ব্লগারদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষক ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দেখে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রিক্রুটের চাইতে মাদ্রাসাগুলির উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করতে শুরু করে। অত:পর তারা আরও গুরুত্ব দিয়ে আদর্শগত ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে থাকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে।
অভিজিত রায়ের হত্যার এক মাস পরেই ওয়াশিকুর রহমান বাবু (২৭) নামক অপর একজন ব্লগারকে হত্যা করে। তারা একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে সেখানে দুইজন সিনিয়র অস্ত্র প্রশিক্ষক থাকতো একটি ভষ্যিতে খুনী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেবেন এমন একটি গ্রুপের মাদ্রাসা ছাত্রের সাথে। একজন শিক্ষা দিত কিভাবে চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে মানুষ নির্ঘাত খুন হয় এবং কিভাবে পিস্তল ব্যবহার করতে হয় যদি চাপাতি দিয়ে আঘাতের সময় কেউ ছুটে আসে তাকে বাঁচাতে এমন লোকজনদের হটিয়ে দিতে। নিহত ব্লগার আশিকুর রহমান বাবুর ছবি এবং ঠিকানা তাদের হাতে দিয়ে বাবুর বাড়ীর কাছে মহড়া দিতে পাঠানো হতো এটা নির্ধারণ করতে যে; কোন পরিস্থিতিতে কখন নিরাপদে হত্যা করা যেতে পারে। অন্যদিকে বাবুর কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট লেখা পড়িয়ে ঐ প্রশিক্ষণার্থী গ্রুপকে জিজ্ঞেস করা হতো, এই সব ধরণের লেখা যে লেখে তার শাস্তি কি হওয়া উচিত? শিক্ষার্থীরা সমস্বরে জবাব দিত ‘একমাত্র মৃত্যু’।
Moktel H. Mukthi's photo.মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ এখন এদেরকে ধরার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা করছে। সন্দেহভাজনদের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে যে, ‘যারা বা যিনি এদের ধরার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে পারবে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে। অন্য জঙ্গি গ্রুপ জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি অবশ্য আনসার আল ইসলামের চেয়ে কম সক্রিয়। কতিপয় ভুল পদক্ষেপের কারণে তাদের সমর্থক সংখ্যা কমে গেছে। এই গ্রুপ ৫০ থেকে ১০০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল খুনী হিসেবে তাদেরকে চারজন করে এক একটি গ্রুপে সংগঠিত করেছিল। কিন্তু এরা এমন ব্যক্তিদের খুন করে ফেলে যারা ব্যাপক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অন্যজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক যিনি দরিদ্র রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিতেন।
যখন হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করা হলো, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল যে তারা ৬৬ বছর বয়স্ক একজন জাপানী নাগরিককে হত্যা করেছে। অথচ ২০১৫ সালেই তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল। ফলে এই খুনীরা দ্রুত জনপ্রিয়তা হারায় এবং জনগণ ওই খুনীদেরকে ধরতে পুলিশকে ব্যাপক সহযোগিতাও দেয়। পুলিশ এখন তাদের নেতাদেরকে ধরতে সচেষ্ট। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, বলেন মনিরুল ইসলাম।
অনেকে লুকিয়ে আছেন-অনেকে দেশত্যাগী হয়েছেন-আবার অনেকে তাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিত্যাগ করে লেখালেখি ছেড়েছেন এবং এমন কি, সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াও ছেড়েছেন। এই জঙ্গিদের কার্যকলাপের ফলে জাতিকে এই মূল্য দিতে হচ্ছে, বলেন সুধীজনেরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের ইন্টারভিউ নিয়ে লেখাটি হয়তো আগ্রহী পাঠক পাঠিকাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং দেশের পরিস্থিতি বুঝতেও কিছুটা সহায়ক হবে। পাবনার আশ্রমসেবক হত্যাকাণ্ড লেখাটি শেষ হতে না হতেই জানলাম, গত ১০ জুন ভোরে পাবনার বিখ্যাত (এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সমৃদ্ধ) হেমায়েতপুরের শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে ৪০ বছর ধরে সেবক হিসেবে কর্মরত ৬২ বছর বয়স্ক নিত্যানন্দ পান্ডেকে ভোর বেলায় নৈমিত্তিক প্রাত:ভ্রমণকালে একই পদ্ধতিতে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা আঘাতই শুধু করেনি তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই নিত্যরঞ্জনকে হত্যা করা হলো পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। কারণ আগের দিন আইজির নেতৃত্বে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা (সম্ভবত: চট্টগ্রামের এসপির স্ত্রী হত্যার পটভূমিতে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঐ দিন রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই জঙ্গি-সন্ত্রাসী ধরার জন্য দেশব্যাপী সমন্বিত সপ্তাহব্যাপী অভিযান শুরু করবে এবং তা করাও হয়। ওই অভিযান শুরুর মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা মধ্যেই এবং পবিত্র রমজানের শুরুতেই হেমায়েতপুর আশ্রমের নিষ্ঠাবান সেবক নিত্যানন্দ পান্ডেকে নির্মমভাবে আশ্রমের নিকটেই খুন করা হলো। আমি শোকাহত। আমরা সমগ্র জাতি শোকাহত। গোটা পৃথিবী উদ্বিগ্ন আজকের বাংলাদেশ নিয়ে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)







Show more reactions

No comments:

Post a Comment